জামায়াতে ইসলামীর খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেছেন, আসন্ন ১৯ জুলাই ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাত দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী যে সমাবেশের ডাক দিয়েছে তার একটি দাবিও জামায়াতে ইসলামীর দলীয় স্বার্থে নয়। বরং প্রতিটি দাবি জাতীয় স্বার্থে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে খুলনা জেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে ১৯ জুলাই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের জাতীয় সমাবেশে অংশ গ্রহণ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারা বিগত ১৭ বছর আন্দোলন করেছে, তারা কি শেখ হাসিনা মার্কা নির্বাচন করে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে অবশ্যই আগে রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার করতে হবে, গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং প্রবাসীদের ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে সকল গণহত্যার বিচার, প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান, প্রবাসীদের ভোট প্রদানের ব্যবস্থা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করার দাবিতে সোহরাওয়াদী উদ্যানে ঐতিহাসিক ‘জাতীয় সমাবেশ’ অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।
জামায়াতে খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমানের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা গোলাম সরোয়ার ও অধ্যক্ষ মাওলানা কবিরুল ইসলাম, মুন্সী মঈনুল ইসলাম, এডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান ও অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ সিরাজুল ইসলাম, মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, এডভোকেট আবু ইউসুফ মোল্লা, মুহা. আশরাফুল আলম, অধ্যাপক আব্দুর রব, খুলনা উত্তর জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি ইউসুফ ফকির। এ ছাড়া সভায় খুলনা জেলার সকল উপজেলা ও থানা আমীর সেক্রেটারিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসীরা জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উল্লেখ করে মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রবাসীরা শুধু অর্থ দিয়ে, বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে নয় বরং তাদের পুরো পরিবার দেশে জিম্মি থাকার পরও প্রবাসীরা বিদেশের মাটিতে বসে জীবন বাজি রেখে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তাই প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কেউ একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্যই পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে কেউ কেউ আপত্তি জানাচ্ছে। তারা চাচ্ছে কোনো মতে একবার ক্ষমতায় বসতে পারলে হাসিনার চেয়েও ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ কায়েমের মাধ্যমে পরিবারতন্ত্রের রাজনীতিকে রাজতন্ত্রে রূপ দিতে। এ জন্য তাদের সংস্কারে আপত্তি, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে আপত্তি, দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবে না প্রস্তাবেও আপত্তি। তারা তাদের নিজেদের মতো করে সংস্কার চায়। যাতে করে শেখ হাসিনার মতো ক্ষমতায় বসে, নিজেদের মতো করে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারে। তাই দলীয় স্বার্থ পরিহার করে দেশ ও জাতির স্বার্থের রাজনীতি করতে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
খুলনা গেজেট/এসএস